Tuesday, August 25, 2015

আমি যখনই যে কোনো লেখক বা কবির কবিতা বা যে কোনো লেখা পড়ি, তখন সেই ব্যক্তি বা লেখক বা কবির লেখা বা কবিতাগুলো আমার কাছে বড় হয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ যদি নজরুল পড়ি তবে নজরুল বড়, যখন জালালুদ্দিন রুমির "মসনবী" পড়ি তখন রুমি বড়, যখন শেখ সাদী পড়ি তখন সেই বড়, যখন "শাহনামা" দেখি তখন মনে হয় মহাকবি ফেরদৌসী বড়। মানে কাকে বড় বলবো আর কাকে ছোট বলবো খুব দ্বিধা দন্দে পরে যায়। হিংসা কাজ করে, কেন তারা এমন, আমি কেন নয়।

Thursday, January 15, 2015

রক্ত এবং কলম 
(রাব্বি উল জিলানী)

একজন প্রেমিকের রক্তের প্রয়োজন-
একজন কবির কলমের প্রয়োজন,
গতকাল উক্ত প্রেমিক তার প্রেয়সীর জন্য নিজের সমস্ত রক্ত জলাঞ্জলি দিয়েছে
কারণ, গতকাল এক হৃদয়বিদারক সংঘাতে তার প্রেমিকার অন্তহীন রক্তক্ষরণ হয়েছিল।

ওদিকে কবি তার প্রেম আর প্রতিবাদের গণসংযোগে -
নিজের সস্তা মূল্যের কলম টি হারিয়ে ফেলেছে
যখন সর্গীয় প্রেমে নারকীয় হামলা ঘটেছিল ,
তখন কবি একাই প্রতিবাদ করেছিল
তার প্রতিবাদের তীব্র ডামাডোলে কলমটি লাপাত্তা।

ঐ প্রেমিকের জীবন যদি বাঁচাতে চাও -
তোমায় অঢেল রক্ত দিতে হবে ,
যদি প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ চাও-
আর বিরহী প্রেয়সীকে যদি দেখতে না চাও
তাহলে ঐ প্রেমিককে এক নদী রক্ত দিতে হবে।

এবং যদি প্রেম আর বিপ্লব চাও,
তবে কবির কলমকে খুঁজে আনতে হবে,
ঐ নামহীন কবির কলমের অনেক মুল্য

কবির কলম এবং প্রেমিকের রক্ত একে অপরের পরিপূরক ,
কারণ প্রেমিকের রক্তই হলো কবির কলমের কালি।

Monday, January 12, 2015

শান্তির ফেরিওয়ালা
(রাব্বি উল জিলানী)

প্রতি ব্যর্থ পদক্ষেপ আর অনিশ্চয়তার মুহূর্ত কেটে যাবার পর মনে হলো ,
আমি তো ব্যর্থ হতে আসিনি ,
বা আমি কোনো খদ্দের হয়েও  আসিনি,
এসেছি বনিক হয়ে আর পসরা সাজিয়েছি শান্তির।
সবাই যখন অভিনয় করে শুভ্র ধ্বজা আর গৌরী পায়রা ওড়ানোর
একসময় একটাকে ওরা ছিঁড়ে  ফেলে আর একটা কে গিলে খায় ,
তখন আমি শান্তির ফেরি করা শুরু করি।

রীতিমত হাঁকডাক দিয়ে যখন শান্তি শান্তি বলে আহাজারি করি-
ওরা আমাকে তখন পাগল বলা শুরু করে,
 আমি প্রতিটা হাট বার এবং বাজারের মুহুর্তে আমার পসরা বিছিয়ে দেয়,
বিরামহীন ভাবে অপেক্ষা করি মুহুর্তের পর মুহূর্ত-
অথচ একজন খদ্দের ও কিনতে আসেনা অবহেলিত, দলিত এই শান্তিকে
বরং আমার শান্তির দোকান থেকে সবাই অন্তত এক হাজার হাত দুরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করে ,
যেন এইডস বা ক্যান্সার এর দোকান সাজিয়ে বসেছি।

কখনো কখনো অস্পৃস্য হয়ে যায়  আমি আর আমার দোকান,
যেন অচ্ছুত, ছুয়ে ফেললে সাত জনমের জাত চলে যাবে-
তাহলে যে বিশ্ব জুড়ে এত শান্তি শান্তি বলে আর্তনাদ ,
বড় বড় নিকেতন আর কমিশন ,
এগুলো কি কোনো নাটকের অংশ।

জানিনা -
হতে পারে নাটক, হতে পারে সিনেমা বা আনাড়ি হাতের ডকুমেন্টরি-
অথবা শান্তির নাম ভাঙিয়ে অশান্তির রমরমা বানিজ্য,
তাতে আমার কোনো কষ্ট নেই-
আমি ফেরিওয়ালা হয়ে এসেছি শান্তি বেচতে, কেউ কিনুক বা না কিনুক-
সূর্যাস্ত অবধি আমাকে অপেক্ষা করতেই হবে।  

Friday, January 9, 2015



ঐক্যনাশ
( রাব্বি উল জিলানি )

যখন আমার জাহাজ টি জলে ভাসিয়ে দিলাম , আর তখনি কি'না ভাটার সময় চলে এল।
যখন তুমি শুভ্র রেশম বস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দৌড়ে আসছিলে , তখনই বৃষ্টি হলো,
আর পঙ্কিল জলরাশি তোমায় কোমর পর্যন্ত আচ্ছাদিত করলো।
যখন ঘোষিত হতে যাচ্ছিল তোমার আমার মহা ইত্তেফাক , তখন তুমি আর আমি শত্রু তে পরিনত হলাম।
একবার আমি আমার ভাঙ্গা জাহাজের মাস্তুলে তাকালাম আর একবার তোমার শুভ্র পোশাকে ,
জাহাজের কাঠ গুলো পঁচে গিয়েছিলো , তোমার শুভ্র লেবাসে অষ্ট নরকের আগুন লেগেছিল,
তখনি বুঝলাম ,,,,,,,,
হারালো আমার ইত্তেফাক এ, হারালো প্রমোদ তরী।
হারালো প্রেয়সী, গৌরী বসন, না পাওয়ার আহাজারি।
এত ক্ষুধা এত বাঁধা টপকিয়ে,এত মরু তরু ভেঙে _
প্রেম ভাঙ্গণের বিপ্লব এল অবলার খুনে রেঙে।
পারিনি এ প্রেম টিকিয়ে রাখতে শিশুর কলিজা খেয়ে,
শুভ্র বসনে রক্ত ঢেলেছি ভাটির বালিতে নেয়ে।

Thursday, January 8, 2015

 তখনও সূর্য ওঠেনি 
(রাব্বি উল জিলানী )

সূর্যের এত উত্তাপ ছিল সেদিন পুরো পৃথিবী কে রূক্ষ আর মলিন লাগছিল
সমুদ্রের জল শুকিয়ে গিয়েছিল ,
বৃক্ষের পাতাতে যেন দাবানলের আগুন লেগে গিয়েছিল,
আর অন্যদিকে সাহারার তৃষ্ণা নিয়ে গগন বিদারী হাহাকার  করছিল কেউ কেউ।
এমন বহু সময়ের বহু বেদনার মুহূর্ত পার করতে কেউ প্রস্তুত ছিলনা।
কিন্তু মানো আর নাই মানো আমরা কিন্তু কেউই জানতাম না ,
এমন পরিস্থিতির কারণ,
দিকে দিকে সৈন্য বহর পাঠানো হলো, সেচ্ছাসেবক কিছু যুবক জীবনের ঝুঁকি নিল
ঘরে ঘরে উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়ল , মৃত্যুর বার্তা বাতাসে বাতাসে ফিরতে লাগলো,
অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠলো গৃহযুদ্ধ
ঠিক তখনি সব কল্পনাকে বিলুপ্ত করে , আকাঙ্খার সেই অনাকাঙ্ক্ষিত সত্য উন্মোচিত হলো ,
সূর্য কোনো উত্তাপ ছড়ায়নি আর আর পৃথিবীও বিপর্যয়ের মুখে পরেনি ,
তোমার রূপের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে।    
আমার একার পথ
(রাব্বি উল জিলানী )
এই পথে আমি একাই চলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কোথা থেকে যেন তুমি এসে হাজির হলে।
আমি অনেকবার চেষ্টা করেও তোমাকে ফেরাতে পারিনি,
যখন তুমি আর আমি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়ার উপক্রম
ঠিক তখনি তুমি স্বপ্ন দেখালে ,
আমরা পাতাল ফুঁড়ে এবং সাত আসমান অতিক্রম করে স্বপ্নের সওদা করলাম  ,
বসরায় গোলাপ এবং পাতাবাহারের বাগান পরিদর্শন করলাম,
তোমার চিবুক থেকে আগুন ঝরছিল
রক্তজবার মত টকটকে লাল হয়ে ছিল তোমার চোখ ,
তবে ক্রোধ নয় যেন প্রেমের উত্ক্ষিপ্ত নক্ষত্র,
কিন্তু এত কিছুর পরেও তোমাকে ফেরাতে হলো
কারণ তোমার রক্তাক্ত নিথর দেহ পরে ছিল ,
আর মাথার উপর দিয়ে ক্ষমতা লোভী , স্নায়ু যুদ্ধের উদ্রেককারী এবং
নব্য সম্রাজ্যবাদের পিশাচদের যুদ্ধ বিমান ঘুরপাক খাচ্ছিল।
আমি না ফেরালেও ওরা তোমাকে ঠিকই ফিরিয়ে নিয়ে গেল।
রক্ত গোলাপ 
( রাব্বি উল জিলানী )

একটি রক্ত গোলাপের জন্য লড়াই হয়েছিল,
লড়াই হয়েছিল তার প্রতিটি পাঁপড়ির জন্য, এক টানে যতটুকো ঘ্রাণ নেওয়া যায় তার জন্য,
আর লড়াই হয়েছিল ফুলের ডগায় জমে থাকা শীতল শিশিরের জন্য,
স্নায়ুতে স্নায়ুতে যুদ্ধ আর শিরায় শিরায় উন্মাদনা ফুটে উঠছিল,
কিন্তু নির্মম বাস্তবতা এটাই ছিল যে ,
কেউই সেই গোলাপের মালিক নয়।

প্রতি ঘ্রাণে ঘ্রাণে যখন মৃত্যুর গন্ধ ভেসে আসছিল
প্রতি পদক্ষেপে যখন যন্ত্রণার উদ্রেক হচ্ছিল,
সেদিকে কারো ভ্রুক্ষেপ করার সময় ছিলনা,
যখন আরাফের মাঝখান থেকে সুখ এবং কষ্ট দুই ই ভেসে আসছিল
তখনও লড়াই চলছিল,
এত কিছুর পরেও সবাই ফুলটির দিকে ছুটে যাচ্ছিল,
কারণ ধ্বংসযজ্ঞ চালানো সকল প্রানের মাঝে একমাত্র রক্ত গোলাপই নিস্পাপ ছিল,
কেননা সেটির মালিক কোনো মানুষ ছিলনা।